Friday, June 25, 2021

লাখ লাখ জাল স্ট্যাম্পে আসল দলিল, চুক্তিনামা


 রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় জাল স্ট্যাম্প তৈরির ছাপাখানার সন্ধান পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সেখানে অভিযান চালিয়ে ২০ কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্পসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব জাল স্ট্যাম্পে কেউ হয়তো দলিল করছেন, কিন্তু স্ট্যাম্পটাই নকল।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন আবু ইউসুফ ওরফে পারভেজ ওরফে রানা, আতিয়ার রহমান সবুজ, নাসির উদ্দিন ও নুরুল ইসলাম ওরফে সোহেল। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ পরিচালিত এক অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেফতার চক্রের মূলহোতা আবু ইউসুফ। চক্রটি ২০১৭ সাল থেকে কম্পিউটার ও প্রিন্টার ব্যবহার করে জাল স্ট্যাম্প তৈরি করে বিক্রি করতো। তবে ২০১৯ সাল থেকে গোপন ছাপাখানা বসিয়ে বৃহৎ পরিসরে জাল স্ট্যাম্প তৈরি শুরু করে। তিন ধাপে এসব জাল স্ট্যাম্প ক্রেতা পর্যায়ে পৌঁছে দিতেন তারা। তাদের কারখানা থেকে বরিশাল, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার নামে খাম উদ্ধার করা হয়েছে। তারা এসব জাল স্ট্যাম্প দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হতো। গ্রেফতাকারকালে ছাপাখানা থেকে ২০ কোটি ২ লাখ ২৪ হাজার টাকার মূল্যের ১৩ লাখ ৪০ হাজার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের ১৯ হাজার ৪৮০টি জাল কোর্ট ফি এবং জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রির নগদ ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের ১ কোটি ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার ১৮টি চেকের পাতা, ১১৪ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার, ডাক বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিল ও বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। ওই ছাপাখানা থেকে বিপুল পরিমাণ কাগজ জব্দ করা হয়, যা দিয়ে অন্তত আরো শত কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্প বানানো সম্ভব ছিল।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, হাসপাতাল, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমনকি আদালতেও এসব জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প সরবরাহ করা হতো। তবে প্রতিষ্ঠানের মূল কর্তাব্যক্তিরা হয়তো বিষয়টা জানেও না, যারা এগুলো কেনার দায়িত্বে থাকে পিয়ন বা ক্লার্ক তারাই কম দামে এগুলো কিনে থাকে। এটাও এক ধরনের অপরাধ। এসব জাল স্ট্যাম্পে কেউ হয়তো দলিল করছেন, কিন্তু স্ট্যাম্পটাই নকল। এসব ব্যবহারে দুর্নীতি বেড়ে যাচ্ছে, সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এজন্য সবাইকে রেজিস্টার্ড জায়গা থেকে স্ট্যাম্প কেনার পরামর্শ দেন তিনি। আসল স্ট্যাম্প ইউভি মেশিনে দিলে জলছাপ জ্বলজ্বল করে এবং কালো রেখাগুলো দৃশ্যমান। কিন্তু নকল স্ট্যাম্পে এগুলো দৃশ্যমান না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হঠাৎ বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে তারা এই ছাপাখানা স্থাপন করে জাল স্ট্যাম্পের ব্যবসা শুরু করে। তাদের প্রেস মেশিটনটি অনেক দামি, জার্মানির। কাগজ দিয়ে হুবহু নকল করে এসব বানানো হতো। এ চক্রে শুধু চারজনই নয় আরো কেউ জড়িত আছে। এটা অনেক বড় একটি চক্র। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানা যাবে জানান তিনি।

তথ‍্য সংগ্রহঃ

ইত্তেফাক/এসজেড

Wednesday, June 23, 2021

ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড থেকে পিয়ন, সবাই ঘুষের ভাগ পায়

 


রবিবার (১৩ জুন) সকালে রাজধানীর সবুজবাগ ভূমি অফিসে আমির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তার সাথে খুব বাক-বিতণ্ডা করছে। পরে জানা গেলো আমির সাহেব তার ক্রয়কৃত জমির নামজারি করানোর জন্য ঘুরছেন কিন্তু ভূমি কর্মকর্তরা তাকে তিন মাস যাবৎ ঘুরাচ্ছেন। আজ বলে এই কাগজ নেই, কাল বলে ওই কাগজ নেই।

আমির উদ্দিন জানায়, যদি ভূমি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের তাদের দাবিকৃত টাকায় রাজি হয়ে যেতাম তাহলে নাকি তারা ১৫ দিনের মধ্যে নামজারি করে দিত।

এভাবেই চলছে রাজধানীর ভূমি অফিসগুলোর কার্যক্রম। ইত্তফাক অনলাইনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বেড়িয়ে এসেছে রাজধানীর ভূমি অফিসগুলোতে দুর্নীতির নানা হালচিত্র।

এ ঘুষ শুধু আমার পকেটেই যায় না

নামজারিসহ বিভিন্ন কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ভূমি মালিকরা। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হয় না সবুজবাগ ভূমি অফিসে। ঘুষের রেটও মোটামুটি বেঁধে দেওয়া। প্রতিটি নামজারির জন্য অতিরিক্ত ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হয়। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক ভূমি অফিসের এক সহকারী কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হলে ঘুষ লেনদেনের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এ ঘুষ শুধু আমার পকেটেই যায় না। এর ভাগ সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) থেকে শুরু করে কানুনগো, সার্ভেয়ার, নামজারি সহকারী এমনকি পিয়ন-দারোয়ানরা পর্যন্ত পেয়ে থাকেন।’

ভূমি অফিসগুলো হয়রানি নিয়ে ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মানুষের যাতে ভূমি অফিসে এসে কোন কাজ করতে না হয়- আমরা ভূমি ব্যবস্থাপনাটাকে সেই স্থানে নিয়ে যেতে চাই। আমি যদি মানুষকে কাজের জন্য অফিসে যাওয়া বন্ধ করতে পারি, তবে দুর্নীতি জিরো হয়ে যাবে। রাতারাতি তো মানুষকে বদলে দেওয়া যাবে না। এজন্য আমরা সিস্টেমে হাত দিয়েছি।’

মোহাম্মদপুর ভূমি অফিস রাজধানীর মোহাম্মদপুর ভূমি অফিসে গিয়েও দেখা গেল একই চিত্র। ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (সহকারী তহশিলদার) সঙ্গে সুনীল কর্মকার নামের এক ব্যক্তি তর্ক করছিলেন। সুনীলের অভিযোগ, তিনি হিন্দু বলে তার কাছ থেকে বেশি খরচ নেওয়া হচ্ছে। ঘুষ লেনদেনের কথা স্বীকার করে এক কর্মকর্তা বলেন, কোন কাজে কাকে কত ঘুষ দিতে হবে, সে বিষয়ে সহায়তার জন্য প্রতিটি ভূমি অফিসে ঝোলানো রয়েছে অঘোষিত ঘুষের তালিকা।’

ডেমরা ভূমি অফিস ডেমরা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, কিছুটা চালাকি অবলম্বন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ লেনদেন চলে। ডেমরা ভূমি অফিসের দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়ারানি বিষয়ে জানতে চাইলে ডেমরা রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘ডেমরা ভূমি অফিসে দুর্নীতি হয় বা হচ্ছে এটা বলা যাবে না। যদি কারও বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে লিখিত জানান, আমরা ব্যবস্থা নিব।’

এ বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুর্নীতির ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। আমরা নিজেরাও চাই জনগণ যাতে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়। হয়রানি ও দুর্নীতি এখানে থাকতে পারবে না। এজন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৃষ্টিভঙ্গী ও কাজের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বৃহৎ সংখ্যক ভূমিসেবা গ্রহীতাদেরকে স্বল্প ব্যয়ে, স্বল্প সময়ে ও হয়রানি মুক্তভাবে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আবহমান কাল থেকে প্রচলিত বিধি-বিধানের আলোকে চালুকৃত ভূমি উন্নয়ন কর আদায় পদ্ধতি ডিজিটাইজেশন করা হয়েছে।’ তথ্য সংগ্রহ 

ইত্তেফাক/এসজেড

দলিল রেজিস্ট্রির সময় ডেপুটি এটর্নি জেনারেলের কাছেও ঘুষ আদায়!

 


দলিল রেজিস্ট্রির সময় ডেপুটি এটর্নি জেনারেলের কাছেও ঘুষ আদায়!
বিএম রফেল ও কুষ্টিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় জমির দলিল সম্পাদনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বিএম রফেল-এর কাছেও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কুষ্টিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মঙ্গলবার (২২ জুন) ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বিএম রফেল এর কাছে রেজিস্ট্রি অফিসের দুই কর্মচারীর ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি ও পরে দফা-রফায় দর কমিয়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করা হয়। ওই ডেপুটি এটর্নী জেনারেল এর ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘুষ আদায়ের ভয়াবহ এ চিত্র উঠে এসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক লোন নিতে মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে আসেন। জমির বন্ধকী দলিল সম্পাদনের পর অফিসের করনিক মুকুল ও পিয়ন আক্কাস ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এর কাছে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এসময় তিনি তার পরিচয় দেন এবং দাবিকৃত টাকার বিপরীতে রশিদ দাবি করেন। তার পরিচয় জানার পর দুর্নীতিবাজ ওই দুই কর্মচারী দর কমিয়ে ৩০ হাজার টাকার স্থলে ২৫ হাজার ঘুষ দাবি করেন। এসময় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ এটর্নি জেনারেল এর বড় ভাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ওই এটর্নি জেনারেল রেজিস্ট্রি অফিস ত্যাগের পর তার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে দুর্নীতিবাজ ওই দুই কর্মচারী ১০ হাজার টাকা আদায় করেন।

এদিকে ঘটনার পর পরই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিএম রফেল তার ফেসবুক নিজ আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, “এসেছিলাম কুষ্টিয়া সাব রেজিস্টার অফিসে জমি রেজিস্ট্রি করতে। এসে দেখলাম ঘুষ বাণিজ্য কাকে বলে। করনিক মুকুল ও পিয়ন আক্কাস প্রকাশ্যে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চায়। নিজের পরিচয় দেওয়ার পরও নূন্যতম সম্মান না দেখিয়ে এটা এখানকার নিয়ম বলে তারা দাবি করেন। পরে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে কাজটি শেষ করলাম। দেখার কেউ নাই।”

এদিকে ফেসবুকে ঘুষের বাণিজ্যের বিষয়টি উঠে আসায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে তোল-পাড় শুরু হয়। টাকা ফেরতসহ বিষয়টি মিমাংসা করতে সাব-রেজিস্ট্রে অফিসের কর্মকর্তারা করতে দৌড়-ঝাঁপ করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা হালে পানি পাননি।

উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া সদরসহ জেলার সব রেজিস্ট্রি অফিসে গড়ে উঠা শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্রের রোষানলে পড়ে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও ঘুষ বাণিজ্যসহ দলিল প্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায়ে বাধ্য করা হয়। এর আগে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি কুষ্টিয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ ও অফিস সকারী রফিকুল ইসলাম ঘুষের ১ লাখ ৪ হাজার ৪ শত ঘুষের টাকাসহ দুদকের অভিযানে হাতে-নাতে ধরা পড়েন। চলমান ওই মামলায় জামিনে মুক্তি লাভের পর ওই সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রতকে পুনরায় এখানে স্বপদে বহাল রাখা হয়। ফলে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দলিল লেখক সমিতির যোগসাজশে গড়ে উঠা সিন্ডিকেট চক্র হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য।

No description available. এর আগে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি কুষ্টিয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ ও অফিস সকারী রফিকুল ইসলাম ঘুষের টাকাসহ দুদকের অভিযানে হাতে-নাতে ধরা পড়েন। ছবি: ইত্তেফাক

কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ জানান, বিএম রফেল আমার দপ্তরে এসেছিলেন জমি রেজিস্ট্রি করতে। আমি দ্রুত উনার জমি রেজিস্ট্রি করে দিই। এ বিষয়ে দুই কর্মচারীর ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।

জেলা রেজিস্ট্রার প্রভাকর সাহা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

ইত্তেফাক/এসজেড

Tuesday, June 22, 2021

ভূমি সংস্কার বোর্ডে চাকরি


২টি পদে মোট ০৪ জনকে স্থায়ী চাকরি দিচ্ছে ভূমি সংস্কার বোর্ড। পদগুলোতে যোগ্য নারী-পুরুষ যে কেউ আবেদন করতে পারবেন। আগ্রহীরা আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর (১জন)

যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক(সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রী)।

বেতন: ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ (গ্রেড-১৩)

পদের নাম: অফিস সহায়ক (৩ জন)

যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড হতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

বেতন: ৮২৫০-২০০১০ টাকা। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫( গ্রেড-২০)

বয়স: ২০ জুন ২০২১ তারিখে ১৮-৩০ বছর। বিশেষ ক্ষেত্রে ৩২ বছর

আবেদনের নিয়ম: আগ্রহীরা http://lrb.teletalk.com.bd এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের সঙ্গে ৩০০-৩০০ সাইজের ছবি ও ৩০০-৮০ সাইজের স্বাক্ষর স্ক্যান করে যুক্ত করতে হবে। টেলিটক প্রি-পেইড সিমের মাধ্যমে ১ নং পদের জন্য ১১২, ২ নং পদের জন্য ৫৬ টাকা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পাঠাতে হবে।

সংগ্রহঃ banglatribune.comJun 22, 2021 9:30 AM

Monday, June 21, 2021

ভূমি জরিপ এবং খতিয়ান কি?

 

ভূমি জরিপ এবং খতিয়ান কি?

নির্দিষ্ট কোন এলাকার প্রত্যেক ভূখন্ড সরেজমিনে পরিমাপ করে নির্দিষ্ট স্কেল অনুসারে এর অবস্থান এবং আয়তন সম্বলিত একটি মৌজা নকশা প্রণয়ন করে প্রত্যেক ভূখন্ডের মালিক, দখলদার, জমির পরিমাণ, মালিকানার পরিমান, জমির শ্রেণী ইত্যাদি সম্বলিত ভূমি রেকর্ড বা খতিয়ান প্রনয়ন করাই ভূমি জরিপ। সহজ কথায়, মৌজা নকসা প্রণয়ন এবং স্বত্বলিপি (RoR) তৈরির কাজকে ভূমি জরিপ বলা হয়।বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন জরিপ নিম্নরূপঃ

সি,এস, জরিপ (Cadestral survey) বা সি,এস, খতিয়ান):
১৮৮৮ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের তত্বাবধানে বাংলায় একটি ভূমি জরিপ হয় যাকে সি,এস, জরিপ বলে। কক্সবাজারের রামু থানা থেকে শুরু হয়ে দিনাজপুরে এ জরিপ শেষ হয়। প্রথম হলেও এ জরিপকে নির্ভুল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।  এই জরিপের মাধ্যমে তৈরি নকশাকে সি,এস, নকশা; এবং খতিয়ানকে সি,এস, খতিয়ান বলা হয়। মামলা-মোকদ্দমায় কিংবা বিবাদ মিমাংশার ক্ষেত্রে এ খতিয়ানকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়।

এস,এ, জরিপ বা এস,এ, খতিয়ানঃ
রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর মাধ্যমে জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ হবার পর জমিদারদের নিকট থেকে অধিগ্রহনকৃত জমির হিসাব নির্নয়, বিলুপ্ত জমিদারীর ক্ষতিপূরন প্রদান, জমির দখলদার রায়তদের জমির মালিক হিসেবে সরকারের অধীনে আনয়ন ও মালিকানার স্বীকৃতি প্রদান প্রভৃতি কারনে ভুমি জরিপের প্রয়োজন দেখা দেয়। সি,এস, রেকর্ড সংশোধনের লক্ষে জমিদারদের নিকট থেকে কাগজপত্র সংগ্রহের পর ১৯৫৬ থেকে ১৯৬২ এর মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত জরিপের মাধ্যমে যে রেকর্ড প্রস্তুত হয়, তাকে এস,এ, জরিপ বা এস,এ, খতিয়ান বলে। সংক্ষিপ্ত সময়ে জমিদারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান প্রস্তুত হয় বলে এতে প্রচুর ভুল-ভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়।

আর,এস, জরিপ বা আর,এস, খতিয়ানঃ
এস,এ, জরিপের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত খতিয়ানে প্রচুর ভুল-ভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয় বিধায় তা সংশোধনের লক্ষে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তেতে তৎকালিন সরকার ১৯৫৬ সাল থেকে যে সংশোধনী জরিপ পরিচা্লনা করে, তাই আর,এস, জরিপ বা আর,এস, খতিয়ান নামে পরিচিত। ইতোমধ্যে দেশের অধিকাংশ এলাকায় এ জরিপ শেষ হয়েছে এবং কিছু এলাকায় এখনো চলছে।
ল্যান্ডরেজিস্ট্রেশনবিডি

Thursday, June 10, 2021

জমি কেনার পূর্বে যা অবশ‍্যই জানা প্রয়োজন


 


ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের নিয়ম

  


যেকোনো স্থান থেকে ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সহজ পদ্ধতিতে কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে ভূমি কর পরিশোধ করতে পারবেন। যদি কেউ এ পদ্ধতিতে কর পরিশোধ করতে সক্ষম না হয়, তবে যেকোনো কম্পিউটার দোকানে গিয়ে বা যেকোন তথ্য সেবা কেন্দ্রে গিয়ে এ সুবিধা নিতে পারবেন। পেমেন্ট গেটওয়ে চ্যানেলের মাধ্যমে আদায় করা অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সেটেলমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হয়ে ই-চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে স্থানান্তরিত হবে।

বিভিন্ন তথ্য মতে জানা গেছে, মহানগরীর মত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার আবাসিক জমির কর শতক প্রতি ২২টাকা, বাণিজ্যিক ১২৫ টাকা এবং জেলা সদরের আবাসিক জমির কর শতক প্রতি ৭ টাকা, বাণিজ্যিক ২২ টাকা এবং অন্যান্য সকল পৌর এলাকার আবাসিক জমির জন্য কর শতকপ্রতি ৬ টাকা বাণিজ্যিক হার ১৭ টাকা। পৌরসভা ঘোষিত হয়নি এরূপ এলাকার আবাসিক পাকা ভিটি হার ৫ টাকা, বাণিজ্যিক ১৫ টাকা। ১ একরের উর্ধ্বে কোনো জমিতে ফলের বাগান কিংবা ফুলের বাগান থাকলে জমির ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশ জমির জন্য ১ টাকা ১০পয়সা।

পল্লী এলাকার বসবাসকারী কৃষি পরিবারের চাষের জমি এবং বসত বাড়ী কৃষি জমি হিসাবে গন্য করেকৃষি হারে ভূমি উন্নয়ন কর ধার্য হবে। তবে পল্লী এলাকার পাকা ভিটির বাড়ীরজন্য শতক প্রতি ৫ টাকা হারে কর দিতে হবে। বাংলা সনের ভিত্তিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হয়। ৩ বছর পর্যন্ত অগ্রিম ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করা যায়।

২৫বিঘা বা ৮.২৫ একরের কম জমির মালিকেরা ২ টাকার একটি মওকুফ দাখিলা পাবেন। একাধিক বছরের জন্য একটি মওকুফ দাখিলাই যথেষ্ঠ। তবে- এটাকে ভূমি উন্নয়ন কর হিসাবে বিবেচনা করা যাবেনা; বিবিধ আদায় হিসাবে গণ্য হবে। এজন্য প্রতিবছর ২ টাকার মওকুফ দাখিলা সংগ্রহের প্রয়োজন নেই।

কোনো কৃষি জমির মালিকের ২৫ বিঘার বেশী কৃষি জমির মালিক হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট জমির বিবরণ দাখিল করতে বাধ্য থাকেন। কোন ব্যক্তি ২৫ বিঘার বেশী কৃষিজমির মালিক হলে এবং উক্ত জমির বিবরনী দাখিল না করলে কিংবা ইচ্ছাকৃত ভাবে জমির তথ্য গোপন করলে সে দন্ডনীয় অপরাধে অপরাধী হবেন।

জমি বিক্রয়, দান ওয়াকফ ইত্যাদির ফলে অথবা কোনো ভাবেজমি হস্তান্তরের ফলে জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার নীচে নেমে গেলে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত্ব আইন, ১৯৫০ এর ১৫১ ধারার (আই) উপধারা মতে জমির মালিক অথবা তার উত্তরাধিকারীগণ সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট ২৫ বিঘা জমিরবিবরণী কমিয়ে আনার জন্য তথা বিবরনী ভাংগার জন্য আবেদন করবেন। ১ লা কার্তিকের পূর্বে আবেদন করতে হবে। উক্ত আবেদন পাবার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রয়োজনীয় তদন্ত এবং শুনানীর ব্যবস্থা করে যথাযথ মনে করলে বিবরণী সংশোধন বা ভাংগার বা বিবরণী কমিয়ে আনার আদেশ দিবেন। আবেদনটি যদি মন্জুর হলে উক্ত আদেশটি ১লা কার্তিক হতে কার্যকর হয়।

এজন্য পূর্বের বছর গুলোর করের সঙ্গে প্রথম ৬ মাসের কর পরিশোধ করতে হবে। আর কার্তিক মাসের পর আবেদন করলে চলমান পুরো বছরের কর পরিশোধ করতে হবে। তবে জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার নীচে নেমে গেলেও তা কর্তৃপক্ষকে না জানানো পর্যন্ত জমির মালিককে ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পূর্বের বিবরণী মোতাবেকই দিতে হবে।

Wednesday, June 9, 2021

ঘরে বসেই অংশ নেয়া যাবে ভূমি মামলার শুনানিতে

 ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা- এখন আর কেবল স্লোগান নয়, বাস্তবতা। ভূমি রাজস্ব বিষয়ক আদালতে অনলাইন শুনানি ব্যবস্থা চালুর ফলে মানুষের হয়রানি ও ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি সময় সাশ্রয় নিশ্চিত করা যাবে। বুধবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভূমি রাজস্ব বিষয়ক আদালতে অনলাইন শুনানি ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন তিনি। 

অনলাইনে নামজারি, জমাভাগ, বিবিধ মামলা, মিসকেস, সেটেলমেন্ট, রেকর্ড সংশোধন, আপত্তি, আপিল ইত্যাদি ধরনের মামলা শুনানি কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অনলাইনে শুনানি ব্যবস্থাপনা কাঠামোর ওয়েবসাইট এড্রেস acl-dc-db.fihs.school- এই ওয়েবসাইটে গিয়ে একজন নাগরিক তার প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের মাধ্যমে অনলাইনে মামলা শুনানির জন্য অনুরোধ করতে পারবেন ।

ভূমি কর বা জমির খাজনা

 


এখন থেকে সকলে বাড়ীতে বসে থেকে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর বা জমির খাজনা দিতে পারবেন।

শুভ নববর্ষ ১৪৩১